Sunday 6 May 2012

শহীদ




কেউ দেশপ্রেমে শহীদ হয়, কেউ জন্নতের ১৮-টা হূরের লোভে, আবার কেউ প্রেমে। এদের মধ্যে কোনো একটা হওয়াটা ক্ষুদিরামের কপালে নাচছিল। নয়তো কখনো বাপ মা ও’রকম নাম রাখে? হতেই পারতো শাহরুখ, কুনাল, কিংবা রনবীর। তা না, হবি তো হ ক্ষুদিরাম, আর ওই নামটাই হল কাল।

বুঝলেন না? তাহলে বুঝিয়ে বলি।

আশা করি আন্দাজ করতে পারছেন আমি সেই আদি অকৃত্রিম বোসবাবুর কথা বলছি না। তাঁর লাইফ স্টোরির সাথে তো নামের বিশেষ যোগাযোগ নেই। আমাদের ক্ষুদিরাম একদম আলাদা। নিবাস দক্ষিন কলকাতার রিফিউজি কলোনী, কাজ প্রধানত সিনেমার টিকিট ব্ল্যাক করা আর মাছি মারা। এর বেশী পরিচয় নিষ্প্রয়োজন। সত্যি বলতে কি, বলার বিশেষ কিছু নেইও। বাকি যারা আশেপাশে আছে, তারা এতদিনে আশা ছেড়েই দিয়েছে যে ক্ষুদিরাম জীবনে আর কিছু করে উঠতে পারবে।

তো এহেন ব্যক্তির জীবনে রোমাঞ্চকর কোনো ঘটনা তো বড় একটা ঘটেনা। তাই কোনো রোমাঞ্চ ছাড়াই ক্ষুদিবাবুর জীবন চলছিল। এদিকে উঠতি বয়েস, কিছু ছোঁক ছোঁক ত থাকবেই। তার তাড়নেই হোক, বা দৈনিক অভ্যেসেই হোক, আমাদের ক্ষুদিরাম রোজ রাতের শো চলার সময় পাড়ার হলটার ঠিক পিছনের একটা ঠেকে গিয়ে বসতো। ওখানে তখন নানা রকম লোকের আনাগোনা – কারোর মদ চাই, কারোর গাঁজা, কারোর মেয়ে। মানে সব মিলিয়ে বেশ একটা গরমাগরম পরিবেশ। ক্ষুদির অবশ্য প্রথম দুটোয় বিশেষ রুচি নেই। সে শুধু মেয়ে দেখতে যেত – ছুঁড়ি, বুড়ি, মাঝবয়েসী – নানা রকম।

আপনারা নির্ঘাৎ এতক্ষনে দু গাল চাপড়ে ‘তোবা তোবা’ বলে উঠেছেন, আর ভাবছেন এই চুড়ান্ত অস্লীল গপ্পটা ফেঁদে আমি আপনাদের নির্মল সকালটায় এক ছটাক চোনা ফেলার তাল করছি। কিন্তু ব্যাপারটা একেবারেই তা না। আমাদের ক্ষুদি একদমই সে’রকম ছেলে না। যদি সে’রকম হত, তাহলে কি এতদিনে একটাও মেয়েকে পটাতে পারত না?

চেষ্টার অবশ্য অভাব ছিল না। কিন্তু ওই। একে ত অ্যামিবায়োসিসের রুগির মত রূপ-লাবন্য। সেটা অগ্রাহ্য করে যদিওবা কোনো ছুঁড়ি একটু মুচকি হেসে তাকায়, ক্ষুদিরামের দেঁতো হেসে “আমি ক্ষুদি গো, যাবে আমার সাথে?” শুনেই তারা চম্পট দেয়।

শেষে ক্ষুদি পাড়ার রোমিও পিকলুদার দারস্থ হলপিকলুদা ক্ষুদির দুঃখের কাহিনী শুনে মন্ত্রনা দিল “তোর নামটা বদলে ফ্যাল, বুঝলি? দেখিস না, সিনেমার হিরোগুলো সব পটাপট নাম বদলে কুমার হয়ে যায়? ওই ক্ষুদি-ফুদি চলবে না। আজ থেকে নাম নে উত্তম কুমার”।

“কি যে বল পিকলুদা!” ক্ষুদি লজ্জা পেয়ে কেটে পড়ে। যদিও সে পরে ভেবে দেখেছে, আইডিয়াটা মন্দ না। ক্ষুদি নামটা সত্যি কেমন জানি ইয়ে টাইপের। পরের মোলাকাৎ-এর জন্য সে অন্য নাম ভেবে রাখল। এক সপ্তাহ রাত জেগে অভ্যেস করল কিভাবে নিজের নামটা বলবে।

তারপর কিছুদিন কেটেছে। বাজারে একটা হিট সিনেমা এসেছে, তাই ক্ষুদির পকেটেও কিছু মালকড়িও জমেছে। এমন সময় তার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়লো।

মেয়েটাকে বেশ ডাগর-ডোগর দেখতে। অল্প মোটার দিকে, কিন্তু ক্ষুদির ও’রকমই বেশী পছন্দ। প্রথম খানিক্ষণ তো চোখই ফেরাতে পারেনি। এ পাড়ায় নতুন নিশ্চই, আগে ত একে দেখেনি! জামা কাপড় পরার ধরনটাও একটু অন্য রকমের, সেকেলে। নির্ঘাৎ গ্রাম থেকে সদ্য এসেছে, আর ওই বাজে মেয়েগুলোর চক্করে একদম নষ্ট হয়ে যায়নি।

পরপর তিন প্যাকেট পান মশলা শেষ করে, অনেক সাহস জমিয়ে সে গেল মেয়েটার কাছে।

“তোমার নাম কি গো?”

মেয়েটা শুধু ঠোঁট টিপে হাসল।

কি মিষ্টি হাসিটা! “ঊফ্‌ফ্‌! তুমি না... কি বলব? একবার দেখেই তোমায় মন দিয়েছি”।

মেয়েটা এবার খিলখিল করে উঠল। তারপর সুরেলা গলায় বলল “মঁনঁ দেঁব নাঁ, দেঁব নাঁ, দেঁব নাঁ রেঁ”।

ইশ্‌শ্‌! গাইতেও পারে! ক্ষুদি ত গলেই গেল একেবারে “কেন গো? কি চাই তোমার? আমি তোমায় সব দেব। সব। আমি যে তোমার রাম!”

ওমনি মেয়েটার মুখের হাসি শুকিয়ে গেল। “কিঁ নাঁম বঁললিঁ রেঁ মিঁনসেঁ? আঁমি ওঁই নাঁম মুঁখেঁ আঁনবোঁ?”

এইনা বলে, মেয়েটা না, জাস্ট বেমালুম উবে গেল।

11 comments:

  1. গল্পটা জমেনি, আগেরদুটোর মত। :(

    আর শেষ লাইনটা একেবারেই নিষ্প্রয়োজন।

    ReplyDelete
  2. Also, think of how to weave a story; not how soon you can end it.

    ReplyDelete
    Replies
    1. thank you! i really appreciate candid feedback.

      Delete
  3. The Maestro hath spoken, তাহলে হয়ত সত্যিই ভাল হয়নি, কে জানে। তবে আমার মত non-বিদগ্ধ পাঠকের কাছে দারুণ লেগেছে, যদিও I realize that the target readership would essentially be a niche, BB-soaked readership. There are two small suggestions, though: (a) Lose the last line. As Abhishek says, it seems superfluous. (b) Change the 'আমি' to 'য়ামি' - feels more appropriate.

    ReplyDelete
  4. will heed the suggestions of esteemed readers and delete the last line. thank you again.

    ReplyDelete
    Replies
    1. Khasa. Bishes kore sesh diker humor ta reason gone bad.

      Delete
  5. Shesh line’ta jaake bole haalka med. Thakleo hoy, na thakleo khhoti nei. Insignificant byapar aarki. Kintu baki’ta dibyi. Abhishek’dar second comment’tar sutro dhore, short fiction’e the apparent lack of story in the narrative can also work out pretty well. Tabe sekhetre anyanyo dike ektu najor dewa bhalo. Mane muul byapar jehetu ek line’er sehetu anyanyo khejur’ta ektu mon diye kora uchit. Kintu I repeat, eta amar dibyi laaglo.

    ReplyDelete
  6. hi i cACo...
    i just loved it..

    ReplyDelete
  7. Daarun Daarun !

    ReplyDelete